,

নবীগঞ্জে গুজব ‘ছেলেধরা’ আতংকে ঘর থেকে বের হচ্ছে না শিশুরা!

‘ছেলেধরা’ গুজবে কান না দিয়ে সর্তক থাকতে নবীগঞ্জের ওসির আহবান

মতিউর রহমান মুন্না :: ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে’ এমন খবর দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছে একটি চক্র। আর এই গুজবে নবীগঞ্জ উপজেলায় ‘ছেলে ধরা’ আতঙ্ক বিরাজ করছে। গুজব আর ছেলেধরা আতঙ্কে পুরো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের লোকজন চিন্তিত। বানোয়াট তথ্যকে সত্যে রুপান্তর করা হয়েছে মুখে মুখে। চারিদিকে প্রচার করা হচ্ছে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য মানুষের মাথা লাগবে। ছেলে ধরা চক্র নাকি এলাকায় ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং শিশুদের অপহরণ করে নিয়ে হত্যা করে মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার সর্বত্র। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রামাঞ্চলের শিশু ও অভিভাবকরা। ‘ছেলে ধরা’ আতঙ্কে গ্রামের শিশুরা বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। অপরিচিত লোক দেখলেই মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বিপাকে পড়েছে ভিক্ষুকরা। অপরিচিত কেউ ভিক্ষা চাইতে গেলে বেশিরভাগ মানুষেই তাদেরকে ভিক্ষা না দিয়ে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে কে বা কারা ছড়িয়ে দিয়েছে ছেলেধরার এমন ভ‚য়া খবর। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এমন ভ‚য়া খবর প্রচার করায় তারা তাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে রয়েছেন উৎকন্ঠায়। অনেকে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়েও থাকেন চিন্তায়। প্রতিদিনই গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে ‘ছেলে ধরা’র খবর আসছে। তবে ঘটনা অনুসন্ধান করতে গেলে তার সুনির্দিষ্ট কোনো সত্যতা মিলছে না। গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে থেকে এ গুজব দুর করতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন উপজেলার সচেতন নাগরিক বৃন্দ। সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য উপেজলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার আনাচে-কানাচে, বিভিন্ন বাজারে মাইকিংয়ের মাধ্যমে গুজবে কান না দেয়ার লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির আহবান জানান সুশীল সমাজের লোক। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ গুজব। এর কোনো সত্যতা নেই। কোথাও এ ধরণের ঘটনা ঘটেনি। তবে গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সর্তক থাকার জন্য অনুরোধ করছি।’ এদিকে স¤প্রতি পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ পরিচালনায় মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি কুচক্রী মহল বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা প্রকল্প কর্তৃপক্ষের নজরে এসেছে। সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটি একটি গুজব। এর কোনো সত্যতা নেই। এমন অপপ্রচার আইনত দÐনীয় অপরাধ। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।’ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে। মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৯২টি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর